Description
‘রোদ লেগে থাকে গাছের গভীরে। প্রাচীন রোদ। সে কবে বৃদ্ধ সূর্য উঠেছিল একদিন। মহেঞ্জোদাড়োর সূর্য। এখনো, পিতামহনগরীর বৃদ্ধতর ধ্বংসস্তুপ বহন করে সেই সব রৌদ্রস্মৃতি। বাঙলায় তাহাকে ইতিহাস বলে। ইতিহাসচারী মানুষেরা খোঁজ রাখে সেইসব ক্লান্ত বিহঙ্গকালের।
একটা পিঁপড়েরও যেমন ইতিহাস থাকে, সোনাগাছিরও তেমনই এক ইতিহাস আছে। থেকে গেছে। সুদীর্ঘ ইতিহাস। হয়তো গৌরবের নয়, গোলাপী আলোর অধিবৃত্তে থাকা মেট্রোপলিসের আদিম জঠরে লুকিয়ে থাকা ধূসর গলিগর্তের ইতিহাস, কিন্তু ইতিহাস। সময়ের বিস্তৃত ডালপালা সরিয়ে সেই ইতিহাসে একবার ঢুকে পড়তে পারলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে শরীর ও রাষ্ট্রের এক অদ্ভুত সমীকরণ। ― কখনো সংঘাতের, কখনো আপোষের। সোনাগাছির ইতিহাস, উনিশ শতকের কলকাতার পেটের ভিতরে ব্ল্যাক টাউনের ইতিহাস। এবং অবশ্যই ব্ল্যাক আর হোয়াইট টাউনের নিষিদ্ধ যোগাযোগের ইতিহাস। পীর গাজী সনাউল্লাহ শাহের মাজারকে কেন্দ্র করে চোখধাঁধানো এই যৌনপল্লীর উত্থান উনিশ শতকে। এ সময় কলকাতা ঔপনিবেশিক ভারতের রাজধানী, অন্যতম প্রধান বন্দর ও বাণিজ্যকেন্দ্র, আফিম ব্যবসায়ের কেন্দ্র এবং সেনাবাহিনীর ঘাঁটি। নানা ভাষা-ধর্ম-পোশাক-খাদ্য-চরিত্রের মানুষ আসছেন কলকাতায় জীবিকার সন্ধানে ও নির্বাহে। ক্রমশ কস্মোপলিটন চরিত্র পাচ্ছে এই শহর। আর সেই কস্মোপলিটানিজ়ম-এর সমানুপাতে বেড়ে চলেছে যৌন ব্যবসা। সোনাগাছি তাই একান্তভাবেই নাগরিক কোলকাতার শৈশব-কৈশোরের অবদান।…’
Reviews
There are no reviews yet.