Description
বিংশ শতাব্দীর চারের দশক। সারা দুনিয়া টলে উঠেছে নানা ঘটনা আর অঘটনে। বাংলার অর্থনীতি আর দৈনন্দিন জীবনেও পড়েছে তার ছায়া। বিপত্নীক ও নিঃসন্তান ভূপেন্দ্রনাথ তাই কিছুটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। তাঁর শ্রম ও অধ্যবসায়ে গড়ে ওঠা ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করবে কে?
এই পটভূমিতে হঠাৎই দেখা দিল এক অদ্ভুত সমস্যা। ভূপেন্দ্রনাথের বসতবাটিতে আনাগোনা ঘটল এক রহস্যময় আগন্তুকের। কী চায় সে? এই প্রশ্নের রক্তরঞ্জিত উত্তর পাওয়া গেল অচিরেই। আততায়ীর হিংস্র আক্রমণে মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলেন মানুষটি।
তারপর? অপরাধী কি ধরা পড়ল?
একেবারে ধ্রুপদী ঘরানার এই রহস্য উপন্যাসটি পড়তে বসলে শেষ না করে ছাড়া যায় না। শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও তার রেশ থেকে যায় মনে। তার কারণ ত্রিবিধ~
প্রথমত, এই লেখার ভাষা শুধু সহজ ও সুললিত নয়। বরং একে মাখা সন্দেশ বা কবিরাজি কাটলেটের সঙ্গেই তুলনা করা উচিত। পড়তে বসলে আমেজেই জমে যেতে হয়— এমন তার চলন। একসময় ধারাবাহিক উপন্যাসে আমরা এইরকম ভাষায়, ছোট্ট-ছোট্ট নানা উপাদান আর চরিত্রচিত্রণে গড়ে তোলা লেখা পড়তে পেতাম। তারপর লেখার বেগ এসে সেই আবেগ কেড়ে নিয়েছিল। এই লেখাটিতে সেই ভাষাকে ফিরে পেয়ে দিল একেবারে তর হয়ে গেল।
দ্বিতীয়ত, সেই সময়ের বাংলা তথা ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটটিকে একেবারে নির্ভুলভাবে গড়ে তুলেছেন লেখক। তবে দক্ষ সাহিত্যিকের মতো করেই তিনি ইনফো-ডাম্পিং এড়িয়ে, নিজের নিবিড় পাঠকে সযত্নে রেখে দিয়েছেন নজরের আড়ালে। সময়ের পদধ্বনি শুনেছি আমরা; কিন্তু তার সামনে কাহিনিকে সমর্পণ করা হয়নি এখানে।
তৃতীয়ত, ডেম ক্রিস্টি-র পদাঙ্ক অনুসরণ করে লেখক এই রহস্যটি ফেঁদেছেন। আসল অপরাধীকে চিহ্নিত করার পথটি ভুলভুলাইয়ার মতোই জটিল হয়ে উঠেছে। শেষ লগ্নে যখন মুখোশের আড়ালে থাকা মুখটি চিহ্নিত হয়েছে, তখন ভূপেন্দ্রনাথের মতো আমরাও একেবারে হাঁ হয়ে গেছি!
Reviews
There are no reviews yet.